🎤 আমরা প্রায় সবাই জানি যে, ছড়া আজ আর কেবল শিশুতোষে সীমাবদ্ধ নেই। বরং বাস্তবের দর্পন হিসাবে ও প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসাবে উপযুক্ত হাতে তা অনেক সময় সাধারণ কবিতার চেয়েও ক্ষুরধার হয়ে উঠছে দিনদিন। তারই কয়েকটি নিদর্শন আমার প্রিয় কবিদের উদ্দেশ্যে নিচে তুলে ধরলাম:-


দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে
লিখি কথা।
আমি যে বেকার পেয়েছি লেখার
স্বাধীনতা।।        🎤-সুকান্ত ভট্টাচার্য


সর্ষে হলে ধান গাছে
করবে না আর দাঙ্গা সে।
খান না চিনি-গুড় সীতা,
শাকের শোকে মূর্ছিতা;
কাজেই তখন সবাই ধায়
চাষ করতে অযোধ্যায়।  🎤- শঙ্খ ঘোষ


দিন গিয়েছে অনেক কেটে, জামায় এখন সাততালি,
আগের মত দেন না এখন গরম কথায় হাত তালি।
দুঃখ কী তা বোঝেন ভালো,
তফাৎ বোঝেন সাদাকালো,
বোঝে তাদের দুঃখ কত রোজই যাদের পাত খালি?🎤-দীপংকর চক্রবর্তী


মনমোহনের অর্থনীতি
চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে,
সাঙ্গোপাঙ্গ দুইয়ে দুইয়ে
স্ক্যামের সাগর গড়ছে,
এজি ওজি এ গেট ও গেট
স্ক্যামের  নামের গুচ্ছ,
শেয়ার বাজার ইন্ডেক্স ছাড়া
তাঁর কাছে সব তুচ্ছ।     🎤 দুষ্ট কবি (ছদ্মনাম)


চাঁদার জুলুম নেই
সে বারোয়ারি নাকি?
ঘুষের দাবি নেই
সে পুলিশ-ফাঁড়ি নাকি? 🎤 পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় (গীতিকার- কবি)


প্রজা কান্দে পেটের লাইগ্যা
রাজা কান্দে ভোটের লাইগ্যা,
করের টাকা ফাঁকি দিতে
কান্দে বানিয়া।
পুঁজির মালিক নাফা করে
গরিব মানুষ ভুখায় মরে
সরকারি দেনার জোয়াল
ঘাড়ে টানিয়া। 🎤 রাজেশ দত্ত (কবি-গীতিকার)


লিয়ানা লো লিয়ানা
সোনার মেয়ে তুই,
কোন পাহাড়ে তুলতে গেলি
গন্ধ-ভরা  জুঁই ?
বনবাদাড়ে যাইনি মাগো
ফুলের বনেও না,
রাঙা খাদির অভাবে মা
পাতায় ঢাকি গা।    🎤 আল মাহমুদ


*ঋণ স্বীকার:- মিলন সাগর


"""""""""""""""""""'"""""""""""""""
আসুন ছড়া লিখি (৪)
"""""""""""""""""""""""""""""""""""
     🎤 আসুন আজ আমরা সমবেতভাবে এমন একটা ছড়া লিখি যার মাধ্যমে এই উপমহাদেশের পক্ষে অত্যন্ত উদ্বেগজনক একটি বিষয় তুলে ধরতে পারি। বিষয়টি হল ভুয়ো ডাক্তার ও হাসপাতাল আর নার্সিংহোমগুলিতে ভুল চিকিৎসা। যার বলি হয়ে চলেছে আপামর সাধারণ মানুষ। আমরা জানি, দিনের পর দিন ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে হাসপাতাল তথা নার্সিং হোম। সেখানে পরিষেবার চেয়েও মুনাফাকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। মানবিকতা ভূলুণ্ঠিত। ভুল চিকিৎসায় মারা যাবার পরও আকাশছোঁয়া বিল পেমেন্ট না করা পর্যন্ত শবদেহ ছাড়তে চাইছে না। তার ওপর আবার মালিকরা অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে 'বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কেঁদে চলেছে।'  তাই প্রায় প্রতিদিনই খবরের শিরোনাম হয়ে উঠছে, মরণাপন্ন রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে চিকিৎসায় অবহেলা, জাল সার্টিফিকেটধারী ডাক্তারকে দিয়ে চিকিৎসা করা, নানা রকম অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর নামে আকাশছোঁয়া বিলের বহর, ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু ইত্যাদি নানা প্রকার মানবতারহিত ঘটনার সংবাদে। ফলে প্রকৃত গুণী ও মানবিক চিকিৎসকরাও অনেক সময় মানুষের চোখে খলনায়ক হয়ে উঠছে। আবার চিকিৎসালয়ের মালিকরা অধিক মুনাফার লোভে অপেক্ষাকৃত কম বেতনে অদক্ষ ও ভুয়ো চিকিৎসক এবং অদক্ষ নার্স নিয়োগ করে চলেছে। সুতরাং আসুন আমরা সকলে মিলে আজকের এই কালো দিকটিকে তুলে ধরি:-


------
নামটি তোমার সেবাসদন,
সেবা কোথায় গেল?
টাকার থলি নিলে কেড়ে,
ভুল সেবা সে পেল।
--
এরপর আপনারা নিজেদের মতো করে ছড়াটিকে ক্রমশ পূর্ণতার দিকে নিয়ে যেতে পারেন। ছড়াটির কি শিরোনাম দেওয়া যায় সে ব্যাপারেও প্রস্তাব রাখতে পারেন।


সকল কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা।