সেই ছোটবেলায় রাস্তায় হাত ফসকে পড়ে যাওয়ায় -
সমস্বরে চিত্কার - ছেলেটাকে ভালো করে ধরুন,
ছড়ে গেছে হাঠু, কাপড় ছিঁড়ে ওর ব্যাথাতে বাঁধুন।
ইস্কুলে বদরাগী মাস্টার মশায় বললেন -
বাবু, আজ তোমাকে পড়া দিতে হবে না, তোমার না হাঠুতে ব্যথা,
এইটে পড়ি, ফুটবল খেলতে গিয়ে পা ভেঙ্গে গেল -
ক্লাসের মনি এলো, প্রতিদিন মালিশই করে গেল।
মাধ্যমিকের পড়া, রাতে বাবার পাহারা কড়া,
শীতের দিনে কাজের মাসি লুকিয়ে দিল কত চপ সিঙ্গাড়া,
আহারে সেসব তো ছাই। উচ্চমাধ্যমিকে -
মন্টির গণিতটা যদি কপি না করতাম,
আজকের এই চাকরিটাও জুটত না।
বাবার বন্ধু আশুতোষ বাবু তো বলেই দিয়েছিলেন -
তোমার বাবার কথায় দিলাম চাকরি,
একটা ও সঠিক উত্তর দাওনি,
একদিন তো কখনো দাওনি একপিস বা দু-পিস,
রাখোতো তোমার প্রতিশ্রুতি - গোটা বকরী।
কনে জুটল সুন্দরী, এই যে আমার সোনার সংসারী,
সম্বন্ধটা এনেছিল পাড়ার কাকা ভজহরি,
ডাকিনি তাকে একদিন কখনো ভুলে,
খাই আমরা মাছ মাংস, সপ্তাহের পার্টিতে
বন্ধুদের গড়াগড়ি বোতলের জলে।
তবুও মনে পড়েনা তাঁর কথা -
আমার বিয়েতে যার হয়েছিল সবচাইতে মাথা ব্যথা।
শান্তনু'র জোরে নেই নি ভিআরএস,
নইলে বসের ফায়ারিঙে সেদিন নিতাম,
যেদিন পূর্ণ হয়নি চাকরির দশটি বছর,
মাসে চল্লিশ হাজার আসে
(পেনসন কুড়ি আর এফডি'র সুদ কুড়ি) আজ রিটায়ারের পর,
এসব না থাকলে তাড়িয়ে দিত কবে সু-সন্তান আমার -
ভাবি, থাকতাম কোথায় - এই বুড়াবুড়ি!
তার পরে আছে - এই ডাক্তার, ঔষধ দোকান আর ওয়াচম্যান,
আজ পয়সা আছে - তাই পাই, রক্ষক আর রক্ষা, গান আর সেলুট - ম্যান !
আরো কত আছে - কাকে দেব বাদ !
কেন যে বের করেছে সরকার - ভাষাটা ধন্যবাদ।
দূর ! ধন্যবাদ, মুর্দাবাদ ! ধন্যবাদ মুর্দাবাদ !
* ধন্যবাদ জানাতে জানাতে মর্মস্পর্শী কাহিনী - এক দর্দভরি কাহানী (**)
** এই অংশটা - প্রিয় কবি দেবব্রত স্যন্যাল মহাশয়ের কবিতায় মন্তব্য !
*** দেবব্রত বাবুকে অজস্র ধন্যবাদ !!!! আজকের এই লেখার প্রেরণা !!!!!