সেটি ছিল গল্প এক মস্ত,
লোকমুখে এদিক ওদিক ঘুরত,
একা একা রাস্তায় ঘোরোনা,
দুপুররোদে বেড়িওনা,
ছেলেধরা রয়েছে রাস্তায়,
ধরে নিয়ে যাবে পুরে বস্তায়।


ভয় দেখিয়ে দুষ্টুছেলেদের,
ঘরে ধরে রাখার কৌশল ছিল মা-ঠাকুমাদের,
বিজ্ঞান'এর যুগে আর কেউ বলেনা,
শহরে এসব গল্প চলেনা,
গুজব চলে শুধু গ্রামের রাস্তায়,
ঘরে ধরে রাখার প্রথা এখনো পাড়ায় পাড়ায়।


সেদিন শোনা গেল, মুন্নিকে পাওয়া যাচ্ছেনা,
দিন সাতেক কোনো খবর নেই - ঘেরাও হলো থানা,
কতবার পুলিশ এলো, চা বিস্কুটের দফা রফা হলো,
অবশেষে একটা খবরও পাওয়া গেল।
পাশের বাড়ির রাজা - থাকে উত্তর ভারতে,
নিয়ে গেছে ধরে তাকে - বিয়ে করে সাথে।


বিয়ে করেছে - এ তো খুব ভালো কথা,
তাহলে আর নেই কোনো মাথা ব্যথা,
দশম শ্রেণীতে পড়া কিশোরী মেয়ে,
সাতপাকে পড়ল বাঁধা - ল্যাঠা চুকে গেছে, হিল্লে হয়ে।
দুটো বাড়ি কাছাকাছি ছিল ওদের,
পড়াশোনা ছেড়ে, প্রায় পাত্তাই ছিলনা রাজাদের।


মামাদের সাথে সে থাকত ,
শোনাকথা - পানশালায় কাজ করত,
বছর- দু-বছরে দেশের বাড়ি আসতো,
মা-বাবাকে করকরে কিছু নোট্ দিয়ে যেত,
গ্রামে এসে ভালো জামা প্যান্ট আর -
চোখে সানগ্লাস পরে রাস্তায় ঘুরত।


অনেকদিন মুন্নির কোনো খবর নেই - হয়ত আছে সুখে,
সেদিন শুনলাম, অন্য কথা মুন্নির মায়ের মুখে,
রাজা এখন সত্যিকারে হয়েছে সে রাজা,
মেয়েদের ধরে আর বিক্রি করে, সে আর তার গুরু মামা, ভজা।
তিনমাস পরেই সে মুন্নিকে বিক্রি করে দিয়েছে,
পাঁচ লাখটাকা'র বিনিময়ে - তাই পুলিশ তাকে ধরেছে।


আরো খবর, তারা নাকি বানিয়েছে চক্র,
যুবকদের চাকরি দেয় - প্রেম নামক অভিনয়ে যারা দক্ষ,
পুলিশের খাতায় তাদের চক্র এখন নিখোঁজ,
মুন্নিও তিনমাস নিখোঁজ,
ডুকরে ডুকরে কাঁদে তার অবুঝ মা আজ,
বলে - মেয়েধরা থেকে সাবধান ! এখনো ভরা এই সমাজ!