সেদিন ৩রা নভেম্বর ।
মন ভালো নেই আমার,
গন্তব্যহীন আনমনা হাঁটছিলাম আসাদগেটের কাছে
আচমকা মোটরসাইকেলের হর্ণ
ঘুরে তাকাতেই দেখি স্মৃতিধুসর ঝাপসা একটি মুখ. .
দাঁড়িয়ে আছে আমারই অপেক্ষায় ।

যার স্বপ্নে ভরা কৈশোর মধ্য যৌবনে শেষ
আমারই প্রতীক্ষায়
রোদ–বৃষ্টি-ঝড় কুয়াশা ঘেরা ভোর
কত কাটফাটা দুপুর কেটেছে
পায়চারি করে আমারই স্কুলের বরান্দায়,
কলেজগেটে, বাসস্টপে আর কলেজ হোস্টেলের দরোজায়
কেবল এক পলক দেখার আশায়;

যদি একবার চোখে চোখে চেয়ে তার চলে যাই মুচকি হেসে
প্রতিজ্ঞা যেন এভাবেই হাজার বছর পার করে দেবে সে।

কোনোদিন যার ডাকে ফিরে চাইনি দিইনি সাড়া
আজ যেন বাঁধনহীন ছুটে গেলাম অবলীলায়,
বারণ করল না মন আমায়।

তোমাকে সারপ্রাইজ দেব বলে বাবার কাছে জেনেছিলাম জন্মদিনের তারিখ
সেই থেকে প্রতি বছর দিনটি এলেই
বড্ড এলামেলো হয়ে যাই আমি।
সকাল থেকে রাত গভীর অব্দি মন কেমন করে আমার;
একটা মৃত মানুষের স্মৃতি সারাক্ষণ তাড়িয়ে বেড়ায়।

কাছেই সাদামাটা এক রেস্তোরায় বসেছিলাম যুবকের সাথে,
কেমন আছি, কী করছি, কেমন চলছে কাজ-সংসার, ভবিষ্যৎ ভাবনা কী এসব নিত্যকার কুশলাদি বিনিময় শেষে
অতি বিনয় ভরে বলল সে-
একটা জীবন বয়ে বেড়ালাম বুকে এক জিজ্ঞাসা নিয়ে..
আজও খুঁজে ফিরি সেই কঠিন সত্যকে. .

চায়ের কাপের নি:শেষিত চুমুকে
জীবনের সবচেয়ে পরম সত্যটি উন্মোচিত হবার আশঙ্কায় আচ্ছন্ন হয়ে এক নি:শ্বাসে বলে গেল. .  
“যার জন্যে বুকের সমুদ্রে আদিগন্ত কষ্ট তোমার, কী ছিল তার মধ্যে?
কী এমন বিশেষ গুণে গুণান্বিত ছিল সে
যা তুমি আর কারো মাঝেই দেখলে না এ জীবনে ।”

নিরুত্তাপ নির্মোহ শীতল স্বরে এই আমি বললাম. . .
‘‘এক জীবনে এতোটা রিক্ত, এতোটা নি:স্ব,এতোটা ঋদ্ধ কেউ করেনি আমায় ।”