আলোচনা ৭৯


মাত্র সাত লাইনে মানব জীবনের এক চরম বাস্তবতাকে প্রকাশ এবং স্পষ্ট উচ্চারণে কবির জীবন বোধের উপলব্ধিকে অভিনন্দন জানিয়ে, আলোচনা করার প্রয়াস নিলাম। খুব অল্প কথা, খুবই সাধারণ বিষয় কখনো কখনো অসাধারণ হয়ে উঠতে পারে উপস্থাপন দক্ষতায়। কবি  আফরিনা নাজনীন মিলি এর কাব্য ‘আত্মপ্রবঞ্চ’ কবিতা, পাঠকের মনকে হয়তো সেভাবেই নাড়া দেয়ার সক্ষমতা রাখে।


সুখ-দুখ, আনন্দ-বেদনা, আলো-অন্ধকার... বিপরীতমুখী প্রপঞ্চ গুলো মানব জীবনের বাস্তবতা, প্রকৃতির অলঙ্ঘনীয় নির্দেশনা এবং ধনী-গরীব, দেশ-কাল-পাত্র নির্বিশেষে প্রযোজ্য। সবগুলো প্রপঞ্চই পরিসংখ্যান গত ভাবে ৫০-৫০% অবস্থানে সবার ক্ষেত্রে নাও হতে পারে, ব্যক্তি বিশেষে এ পরিসংখ্যানে ভিন্নতা থাকতেই পারে কিন্তু কোন প্রপঞ্চই শুন্য% হিসেবে কারো জীবনেই থাকবে না এটা প্রকৃতির প্রধান শর্ত। তারপরও আমরা কেউ কেউ, এ বাস্তবতাকে অস্বীকার করার দুর্দান্ত সাহস দেখিয়ে সামনে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করি, কেউ কেউ সফল হই, পরিসংখ্যানিক % কিছুটা পালটে দেয়ার চেষ্টা করি এবং সে প্রচেষ্টাকে নিঃসন্দেহে সাধুবাদ জানাই। সমস্যা বাধে, যখন আবার আমরা কেউ কেউ, সত্যকে পাশ কাটিয়ে মিথ্যেকে আঁকড়ে ধরে নিজেকে প্রকাশ করতে চাই। জীবনে কিছুটা সময় দুঃখ আসতেই পারে কিন্তু সেটা মেনে না নিয়ে ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চায়’,


কবিতার মূল বক্তব্য তাই আত্মপ্রবঞ্চ শিরোনাম দ্বারাই পুরোটা ফুটে উঠেছে।  কবি নানা উপমা এবং প্রবাদ ব্যবহার করে চিত্ররায়িত করেছেন কিভাবে আমরা কেউ কেউ সত্যকে অস্বীকার করে ‘আত্মপ্রবঞ্চ’ করি, ‘দুঃখে থাকলেও সুখের গীত গাই”, ‘মেকি হাসির আড়ালে নিজের দুঃখকে লুকিয়ে রাখি’, “ফ্ল্যাশ লাইট নিভলে দেখি, আলু পঁচা বাসি!” ইত্যাদি


কবির জন্য রইলো অভিনন্দন, খুব সুন্দর একটি বিষয় নির্বাচন করার জন্য।