প্রেমের দুর্বোধ্য অনুভূতির আকর্ষণে মানুষ আবিষ্ট হয়ে ধাবিত হয় এক অনির্ধারিত পরিণতির দিকে!
যেখানে প্রতিটি বিস্মৃতি জন্ম দেয় এক গভীর বিরহবোধ।
মানবমনের অন্তর্লীন এক ব্যাকুলতা তাকে বারংবার প্রেমমগ্ন করে তোলে।
প্রেমে পতিত হয়ে সে ক্রমশ তলিয়ে যায় আত্মবিস্মৃতির অতল গহ্বরে!
আর সে স্থানপরিবর্তন করে একটি বিষাদময় বোধজগতে—যেখানে বেদনাই হয়ে ওঠে প্রধান সংবেদ।
তবুও, প্রকৃতির বিশালতার মাঝে সে খুঁজে পায় শুশ্রূষার আশ্রয়।
প্রভাতের প্রথম কিরণ তার আত্মায় অনুপ্রবেশ করে,
জাগায় এক নবসৃষ্টির মহাজাগতিক প্রেমের সুর!
সূর্যের দীপ্তিতে উদ্ভাসিত এই জগৎ তখন রূপ নেয় এক বিশুদ্ধ আরাধনায়,
আর সেই আলোই আবার তাকে তাড়িত করে হৃদয়ের অনির্বচনীয় গভীরতার দিকে—
যেখানে প্রেম তার নিঃশব্দ আহ্বানে ডাকে,
যেন কোনো অতলান্তিক আবেশ!
প্রেম, আপাতদৃষ্টিতে এক নীলাভ কাব্যিক মোহ,
যার নীচে লুকিয়ে থাকে গহিন যন্ত্রণার জটিলতা।
প্রথমে মোহিত হয়ে হৃদয় লিপ্ত হয় নিঃস্বার্থ আত্মবিসর্জনে!
তারপর সেই প্রেমই পরিণত হয় এক জ্বালাময় আত্মদহনযাত্রায়।
মানুষ একসময় ভাবতে শেখে, এ যন্ত্রণার অবসান নেই, এখানে উত্থানের পথ রুদ্ধ।
তবে প্রকৃতি কখনো নির্মম নয়।
তার স্নিগ্ধ স্পর্শে ধুয়ে যায় বিষণ্ণতা।
বর্ষার কণায়, বাতাসের কোমলতায়, আর বকুলের গন্ধরসে মানুষ ফিরে পায় জীবনের পুনর্জাগরণ।
এই পুনর্জন্ম যেন এক অন্তর্নিহিত জাগরণ,
এ এক নূতন অভিযাত্রার প্রেরণা।
কিন্তু আশ্চর্যভাবে, সেই পুনর্জাত মানুষ আবার ধাবিত হয় প্রেমের দিকে—
জানার অজানায়, নির্ণয়ের অনির্ধারিত পরিণতিতে।
হয়তো সে জানে না, আবারও সে জ্বলবে বিরহের জ্বালায়।
হয়তো বোঝেও না, এই প্রেম-ই তাকে ভেঙে গড়ে এক চিরন্তন পুনর্নির্মাণে পরিণত করবে।
এ এক চক্রাবর্ত!
এ এক প্রেম, বেদনার আদলে প্রকৃতির পুনঃসঞ্চার।
এ এক আত্মার নতুন উদ্ভাস।
এই চক্রের অন্তর্নিহিত ছন্দেই—মানবজীবনের প্রগাঢ়তা খুঁজে পায় তার চূড়ান্ত স্বরূপ।
এই চক্র অনিবার্য, অনন্ত, আর চিরায়ত।
=========