তখন অনেক দূরে ছিলে
ভরা পূর্ণিমার জ্যোৎস্নায় সাক্ষাতে এসেছিলে
কাছে এলে, পেয়ে গেলে দোর্দণ্ড প্রতাপ
কুয়াশার চাদর মেলে দিলে
আবছায়া অন্ধকারে ঢেকে যায় চারিপাশ
গভীরে তোমার তুষের আগুন ধিকি-ধিকি
তোমার অন্তরের অগ্নিদাহে পাথরের দেহ পোড়ার গন্ধ ছড়ায়
দুহাতে তোমার হিমশীতল বরফখণ্ড
জনপদের চোখের তারায় ক্রমাগত ছিটিয়ে দিলে
নিশীথের মুসাফিরকে গ্রাস করা তুষারের সমুদয় বর্জ্য
যেন কোনও স্বপ্ন নেই, অধীর প্রত্যাশাও নেই
অতঃপর অহরহ মোলাকাত
প্রত্যাশিত প্রীতিময় শেষ দর্শন ছিলো কবে ?
স্মৃতিরাও যেন ক্রমশ ক্ষীণকায়
বেহায়া উলঙ্গ হলে, তোমার নির্লজ্জ নগ্ন দেহ দ্বারা
ক্রমাগত ধর্ষিত হতে থাকে লোকালয়, রাত্রির ছাদের নীচে পড়ে থাকে
তোমার নখের আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত জনপদের শরীর
কেবল ওড়না বাদে সব কিছু ছিন্ন-ভিন্ন
তুমি চাও ওড়নার নীচে লুকিয়ে থাকুক ধর্ষিতার যন্ত্রণা
যে রক্ত তুমি পান করলে তা বড়ই নোনতা
এখনো তৃষ্ণার্ত তুমি, যার পিপাসা কখনো মেটেনা
নিগৃহীতের তীব্র ঘৃণার আক্রোশ কোথায় ?
অসহায় হৃৎপিণ্ডগুলোর হাহাকার কোথায় ?
তুমি-তো নিপীড়িতের উপর রাত্রির দরজার খিল এঁটে দাও
এরপর সে দরজায় আলিঙ্গন করো
তোমার ছায়া, স্মৃতি ও গুপ্ত কুঠরিতে তা গোপন রাখো
তারপর তোমার আপন অগ্নিতে খুঁজে-ফিরো নিগ্রহ
খুঁজে পাও আপন দহন, জ্বলন্ত শিখায় ধর্ষিতার ভস্ম খুঁজে পাও না
তোমার পাথর-আত্মাকে নিক্ষেপ করো প্রজ্জ্বলিত শিখায়
সেটা পুড়ে যাক বা না পুড়ুক
তোমাকে জ্বলতেই হবে, যাতে তুমি ধর্ষিতার কান্না অনুভব করো
রক্ত ঝরিয়ে, আগুনের স্ফুলিঙ্গে কিংবা অগ্নিবিহীন জ্বলনে
তোমার পাথরের শরীরে দাহ উঠতেই হবে


ফিরোজ, মগবাজার, ২৩/১১/২০১৯