মহিষাসুর সভায় বসে, অসুর চারিপাশে,
হঠাৎ রিনি-ঝিনি আওয়াজ কোথার থেকে আসে?
পরনে লাল ঘাগরা পরা, মল বাজিয়ে পা’য়,
নর্তকী এক এসে দাড়ায় স্বর্গের দরজায়।
‘অসুর-শ্রেষ্ঠ মহিষাসুর সবার চেয়ে বড়ো,
সাহস থাকে আমার সাথে এসে লড়াই করো!’
হা হা করে হেসে অসুর বলল তাকে, ‘ওরে,
তোকে আমি পুষব আমার শোয়ার সাথী করে!
তাকিয়ে দ্যাখ আমার শরীর, দ্যাখ আমার এই পেশী!
ত্রিভুবনে সবার চেয়ে শক্তি আমার বেশী!’
নারী তার এই কথা শুনে চোখেতে চোখ রেখে
কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ায় ঠোঁটে হাসি মেখে।
মহিষাসুর বিশাল শরীর ফুলিয়ে তোলে রাগে
এমন অপমান তো তাকে করেনি কেউ আগে!
পাহাড়-পাথর গুঁড়িয়ে যায় তার বুকেতে লেগে,
ফুলিয়ে সেই বুকের ছাতি গর্জে ওঠে রেগে।
বাহুর পেশী ফুলিয়ে হাসে অহঙ্কারের হাসি,
দুর্গাকে ডাক দিয়ে বলে - ‘হবি আমার দাসী!’
দুর্গা শুনে জবাবে তার হেসে উঠে বলে,
‘মরবি রে তুই আজকে অসুর, আমার পদতলে!’
এই না বলে বাড়িয়ে দিল নিখুঁত সুঠাম পা,
নিটোল পায়ের গড়ন দেখে শিউরে ওঠে গা!
অসুর ধেয়ে এগিয়ে যেতে, দুর্গা তাকে নিয়ে
খেলার ছলে মাটির প’রে ফেলে আছাড় দিয়ে!


অসুর পড়ে মাটির উপর তাকায় দেবীর পানে
সারা গায়ে তুফান জাগে ওই শরীরের টানে।
ঠোঁটে যেন তৃষ্ণা মাখা, চাউনি পাগল করে,
বাড়িয়ে রাখা পায়ের বাঁকে লাস্য ফেটে পড়ে --
দেহে তুলে রূপের ঝলক, বাঁকিয়ে দুই ভুরু -
ভুবনজয়ী কুহকময়ীর নাচের হল শুরু।


নেচে নেচে বুক অসুরের ধরলো পায়ে চীপে,
হাসতে হাসতে মারবে তাকে এক পায়েতে টিপে।
খিলখিলিয়ে হেসে বলে - ‘মরবি আমার পা’য়?’ ..
হাসির দোলায় সারা গায়ে লহর খেলে যায়..
দেবীর পায়ের তলায় চাপা লোহার মতন বুক,
পায়ের চাপে যেমন মরণ তেমন নরম সুখ
নাচছে দেবী, পায়ের তলায় বুকটা ভেঙে যায়,
অহঙ্কারী অসুর লুটায় দেবীর কোমল পা’য়।


রুম-ঝুম-ঝুম বাজিয়ে পায়েল সুন্দরী ওই নাচে,
দানবশরীর ভূলুণ্ঠিত এমন নাচের কাছে।
দলার নেশায় মত্ত দেবী নাচের দমক লেগে,
কামের আগুন ঝরতে থাকে সারা শরীর থেকে।
অসুর ঠেলে সরাতে চায় দেবীর পা-টা ধরে,
সর্বশক্তি হার মেনে যায় পায়ের ঠেকার জোরে।
বুকের ছাতি ডলতে থাকে তুলে নাচের বোল,  
হেসে বলে, ‘দেখি, এ পা সরিয়ে শরীর তোল!’


  ‘দয়া কর - দয়া কর’- চেঁচায় বিকট স্বরে,
  নর্তকীর ওই পায়ের তলায় যোদ্ধা কেমন মরে!
  নিজের রূপের গর্বে দেবী হাসছে হা হা করে,
  অসুর গোঙায় দেবীর পায়ের অঙ্গ চেপে ধরে।
  তা-থৈ-থৈ পায়ের আঘাত অসুররাজের বুকে,
  পায়ের চাপে গলগলিয়ে রক্ত ওঠে মুখে!
  লোহার মত জমাট বুকে নুপূর পরা পা -
  বুক পিষে যায় তবুও দেবীর নৃত্য থামে না।


পায়ে ক’রে দলে পিষে হেলায় অসুর মারে,
থেঁতলিয়ে যায় বুকের ছাতি দেবীর পদভারে।
‘না - না - আরহহ্..মেরো না - আর্-গগ.. -
   মাপ কর, মাপ কর - ’
‘দেখা দেখি এখন তোর ওই বাহু কত বড়?’
পারবি লড়ে জিততে আমার পায়ের পেশীর সাথে?
রক্ত বমি করবি রে তুই আমার এক এক লাথে!’


এই বলে তার বুকের ওপর পা দিয়ে দেয় চাপ,
ছট্ফটিয়ে ব্যথায় অসুর চেঁচিয়ে চায় মাপ।
রূপসী দুই পায়ে বাজায় মরণ-নাচের তাল,
স্বপ্নসুখের সুন্দরী আজ অসুররাজের কাল।
সারা গায়ে গর্ব ঠাসা, হাতে পেশীর ঢেউ,
ত্রিভুবনে তার মত বীর ছিল না আর কেউ,
আজ পড়েছে হুমড়ি খেয়ে দেবীর পদতলে,
বুকের ছাতি ভাঙল দেবীর নাচের ছলে ছলে।
মোহিনী রূপ নেশায় ভোলা অসুর মারার সুখে,
পিষল তাকে দ’লে দ’লে রক্ত তুলে মুখে।
অহঙ্কারী পেল শেষে নিজের পাপের ফল,
মরণকালে বুকে চাপা নারীর পদতল।।