তোমরা মনে করেছো, এত যে প্রেমিক আমি;
এত যে ভালোবাসি কবিতা, ঘৃণা করি ধর্মান্ধতা,
ভালোবাসি বাংলাদেশ এবং তাঁর স্বাধীনতা,
ভালোবাসি প্রগতিশীল যৌগ পৃথিবী,
এত অসহ্য লাগে দরিদ্রের বুকে অসাম্যের লাথি;


তোমরা ভেবেছো হয়তো, জীবন বড় বেশী ভালোবাসি!


আসলে খুব কাঁদি, রজনীর ভেতরে রজনী খুঁড়ে,
লুকিয়ে শুধু কাঁদতে থাকি সবকটা প্রহর জুড়ে,
এ জীবন আমি চাইনি, আমার জন্য নয় এই বিপ্রতীব পৃথিবী;


ওই যে বললাম অসাম্য!
মনে হলে ইচ্ছে করে মৃত্যুকে দু'মুঠোতে ধরে বলি, চল তোর দেশে!
শুধু মনে হয়, আমি দায়ী, মূর্ত অন্যায় হয়ে যেনো বেঁচে আছি;
কেনো আমাকে দেখতে হবে মানবেতর অগুনিত জীবন?
কেনো ও! আমার পায়ে পড়ে মাগবে ভিখ? ও মানুষ হলে আমি কি!
অন্যায়! আমাকে দেয়া বিলাসী জীবন আর কুৎসিত বৈষম্যের এই পৃথিবী;


ঐ যে শুকনো ছেলেটি হাফ প্যান্ট পরা, হাত পাতছে আমার কাছে;
আমার ছুঁড়ে ফেলা আধেক পানীয়ের বোতল,
ময়লা ছেঁড়া জামার মেয়েটি, মুখে হাসি ছড়িয়ে কুড়িয়ে নিচ্ছে;
ঐ যে ডাস্টবিন লোকটি ঘাটছে, রিকশাওয়ালা কপালের ঘাম মুচছে,
ঠেলাওয়ালা অবিরত শ্বাস ফেলছে, ভিখারিনি'র কোলে শিশুটি ক্ষুধায় কাঁদছে;


এইসব! দেখলে, ভীষণ দুঃখে মৃত্যুর কাছে যেতে ইচ্ছে করে;
ইচ্ছে করে সর্বস্ব বিলিয়ে কুড়েঘর, গাছতলায় ঘুমিয়ে থাকি;
কিন্তু পারি না... কারণ আমার জীবনে জড়িয়ে আরো অন্য অনেক জীবন অথবা
বিলাসের কালসাপ তার বিষে আমাকে অভ্যস্ত করে ফেলেছে;
তাই মৃত্যুকে ডাকি ঘুমের ভেতর,
আর অভিমানে বলি ছেড়ে দে আমাকে হতচ্ছাড়া জীবন!


হ্যাঁ, ভালোবাসবো! যতদিন বেঁচে আছি, প্রয়োজন যতদিন;
হয়তো অন্যদের জন্য, যতদিন তাদের দরকার, আর চাইবেন যতদিন আসমানী সরকার;


আসলে, যেদিন থেকে বুঝেছি এই পৃথিবী আসলে কি!
আধাত্মিকতা নয়, মায়া পৃথিবী নয়, এই চির বৈষম্যের মানব জীবন কখনো নয়;
ভালোবাসতে শুরু করেছি অভিমানে কবরের অন্ধকার;


আমি ঘৃণা করি, বৈষম্যে ভরা মহাজীবন!


(০৭.০৭.২০২০)