শব্দের উর্দ্ধমুখী গতি আজ যেন সর্বোচ্চ মাত্রা পেয়েছে
আনন্দে আত্মহারা প্রতিটি মানুষ থেকে জাতির মনুষত্ব ,
মায়ের মুখ থেকে পা আজ লাল সিঁদুরের ছোঁয়ায় রাঙা
মন্ডপ আজ আলোয় আলো, কিন্তু অলিগলিগুলো কানা।
একটা মেয়ে আজ সেই গভীর কালো অন্ধকারের শিকার
শরীরের বিভংস খিদে মেটাতে একটা রক্ষসের নরকীয় রূপ
মন্ডপ থেকে কিছুটা দূরে মেয়েটির আত্মচিৎকার তো দূর
শুনতে পাচ্ছে না কেউ পাশাপাশি দুটি মানুষের কথার সুর।


না, মেয়েটির উপর শুধু শারিরীক নয় ,
মানসিক আর পাশবিক অত্যাচার চলছে।
মেয়েটি বুঝতে পেরেছে এরপরে আর হয়ত সে
'বাঁচবে না' , বাঁচতে দেওয়া হবে না ........ ।
হয়ত গতবার পারমিতাকে যেভাবে পুড়িয়ে মেরেছিল,
বা সুদীপাকে যেভাবে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মেরে ফেলেছিল
হয়ত, হয়ত মেয়েটি ভাবছে এই ক্ষুদার্থ নারক
তাকে মেরে ফেলে দেবে, খিদে মেটার পর ....... ।
নয়তা বা হুমকির পর হুমকি দেবে, অর্থের আড়ালে
বেঁচে বেঁচে মরতে হবে, তীব্র মৃত্যু যন্ত্রনার সাথে পাঞ্জা লড়তে হবে।
কিন্তু আত্মসম্মান পাবে না কোথাও .....!


মেয়েরা তো দূর্গার স্বরূপ, সমস্ত পাপীর পাপহারিণী ....
মেয়েটির কানে বাজছে কাসার শব্দ, বির্সাজনের ঢাক
মেয়েটি হাজারো যন্ত্রনার মাঝেও  শুনতে পেল
এক উঠে দাঁড়ানোর মূল মন্ত্র, সাহসীকতার মন্ত্র ...
' ইয়া দেবী সর্বভূতেষু শক্তিরূপেন্ নমস্তিতায় ..... '
মেয়েটি চুল থেকে বক ক্লিকটা ছুরির মত করে ধরলো
তারপর একবারে গলায় বসিয়ে দিল, সেই ধর্ষকের ....


মেয়েটি এখনও শুনতে পাচ্ছে সেই বিসর্জনের ঢাক
এখনও শুনতে পাচ্ছে, ' মা তুমি আবার এসো .... '
মেয়েটিও নদীতে গেল, ক্লিপটা জলে ফেলে দিল।
মেয়েটির স্নান শেষের সাথে সাথেই
মায়ের বিসর্জন শেষ, সবার মিষ্টি মুখ চলছে ..... ।


কিন্তু কেউ খেয়াল করলো না,
আরও এক নবদূর্গার সৃষ্টি হল, সমাজের পরিবর্তনে।
আসলে, মায়ের কখনও বিসর্জন হয় না।
মায়ের বিসর্জন কখনও হতেই পারে না।