সেদিন প্রথম তুমি যখন  হোয়াটসঅ্যাপে এ হাই পাঠালে
সেদিন বুঝেছিলাম তুমি আমার সাথে কথা বলতে চাইছো।
সেদিন আমি এস এম এস'টা সিন করেই রেখে দিয়েছিলাম।
তারপর তুমি আবার যখন হ্যালো লিখে পাঠালে
তখন বুঝেছিলাম তোমার আগ্রহী গভীরতা পাতাল স্পর্শী।
আমি তোমাকে প্রত্যুত্তরে হাই পাঠালে
তুমি হাসির ইমোজি  আমাকে পুনরায় পাঠিয়েছিলে
তখন বুঝেছিলাম তুমি যথেষ্ট খুশি হয়েছো প্রত্যুত্তর পেয়ে।
তারপর বন্ধু হয়েই কথা বলেছিলে আমার সাথে।


এর বেশ কয়েকদিন পর তোমার সাথে দেখা, কলেজেই.....
বন্ধুদের মাঝে তোমায় প্রথম দেখেছিলাম।
তুমি বোধ হয় তার আগেই আমাকে খেয়াল করেছিলে।
তারপর তুমি ক্লাসের মাঝেই বারংবার পিছন ফিরে
অপেক্ষামান মানুষের মতো আমাকে উদ্মাদের মতোই দেখছিলে
যেন কত কত যুগ ধরে আমাকে একবার দেখার চেষ্টায় ব্যর্থ।
চোখে চোখ পড়তেই তোমার মৃদু লজ্জা দেখে বুঝেছিলাম
দীর্ঘদিনের জমানো সব কথা এক নিমেষে বলতে চাও।


তারপর যখন দূর থেকে আমাকে ইশারা করলে
তখন বুঝেছিলাম তোমার মনে কৌতুহল আকাশ ছোঁয়া।
তারপর অকারণে পাশে এসে যখন অপ্রয়োজনীয় কথা বললে
তখন একটু অধৈর্য হলেও মনে মনে বেশ হাসিই পাচ্ছিল।
আমি বুঝতে পেরেছিলাম, তুমি আমার সঙ্গ চাও।
জমানো কথাগুলো প্রকাশ করে মনের তৃপ্তি পেতে চাও।


যেদিন যখন স্টেশনে দাঁড়িয়েছিলে সেদিন বুঝেছিলাম
তোমার একটা অপেক্ষার শুরু, হয়ত আমারও
তারপর হঠাৎই আমাকে দেখার পর,তোমার মুখের হাসি
আমাকে হালকা আভাসের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছিল
তুমি আমার জন্যই অপেক্ষা করছিলে, ঠিক যেমন চাতক করে।
তারপর তুমিও যখন জেনারেল কম্পার্টমেন্টে উঠেছিলে
আমাকে দেখে তখন আমার একদমই বুঝতে বাকি ছিল না
তুমি আমার পাশেই বসতে চাও।


কলেজে যেদিন যখন তুমি ইতস্ততঃ ভাবেই প্রস্তাব'টা রাখলে
ইছামতি নদীর ধারে ঘুরতে যাওয়ার সেদিন আমি
অল্প সংশয় বোধ করলেও অবশেষে ইচ্ছার কাছে হেরে যাই।
সেদিনই আমি তোমার সাথে প্রথম ঘুরতে গিয়েছিলাম।
আজও মনে পড়ে সেই পুরানো স্মৃতির গভীর পৃষ্ঠটান।
তারপর ক্যাফেতে বসে কত খাওয়া দাওয়া, গল্প গুজব।
ঘন্টা দুয়েক পড়ে যখন আমরা ফিরছিলাম তখন প্রায় সন্ধ্যা।
ফেরার পথে তুমি যখন আনমনে আমার হাত ধরে গল্প করছিলে
তখন আমি বুঝেছিলাম, তুমি আমাকে ভালোবাসো।


এরপর অনেকগুলো বছর কেটে যাই সময়ের হাত ধরেই
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন'টা আমিই করেছিলাম সেদিন
জানতাম তোমার অনেক কষ্ট হবে, তবুও
হয়ত আমার বা তোমার বা হয়ত দুজনের সুবিধার্থে .......


তোমাকে ব্লক করেছিলাম সমস্ত যোগাযোগ মাধ্যম থেকে
হয়ত পড়াশোনার কোনো ক্ষতি না হয় সেটা ভেবেই
আজ সেজন্য বোধ হয় তুমি বড়ো অফিসার হয়েছো।
আমি কিন্তু এতদিনে একজন যোগ্য শিক্ষিকা হতে পেরেছি।
তারপর তোমার সাথে যোগাযোগ করতে গিয়ে দেখি
তুমিও আমাকে সমস্ত যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ব্লক করেছো।
আমিও খুব কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন থেকে আজও
ঠিক ততটাই যতটা তোমাকে আমি দিয়েছিলাম সেদিন।
কিন্তু আমি অপেক্ষার প্রহর গোনা শুরু করেছি সেদিন থেকেই...


আজ আমি আবার দূরপাল্লার ট্রেনে করে যাচ্ছি অনেক দূরে
আজ কেউ প্লাটফর্মে অপেক্ষা করছে না
কারণ সেই অপেক্ষামান ব্যক্তিটি আমার কাঁধে মাথা রেখে
খুব নিশ্চিতেই ঘোমাচ্ছে, এই গভীর নিঃশব্দ রাতে .....


যে ভালোবাসায় অপেক্ষা নেই, অধিকার নেই
সে ভালোবাসা কখনও বোধ হয় স্বার্থকতা পায় না।