আমি বড় মাপের কোন কবি নই- হতেও চাই না
আমি শুধু চাই ভালবাসা- শুধুই ভালবাসা।
আমাকে একটু ভালবাসা দাও-
বিনিময়ে? বিনিময়ে দেব- আমার হৃদয় উজার করা কিছু কথন
কিছু ভাষা কিছু শব্দ- স্মৃতি বিজড়িত বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য
আর- বাংলার সোনালী শ্যামল নীবিড় ছায়া।


তোমাদের কাছে আমার শুধুই চাওয়ার আছে- শুধু একটু ভালবাসা
আর দেবার জন্যে আছে- শ্যামল বায়ু ক্ষেত ভরা ধান
পায়রার বাকবাকুম সুরের গান- সন্ধ্যায় চড়–ই পাখির কিচির মিচির ডাক
শস্য শ্যামলা শ্যামলী বাংলায়- আর কি চাই?
বাংলার রূপ রস আর সবুজে ঘেরা হাজার গ্রাম
যেথায় বাস করে অতি সাধারণ কিছু সরল মানুষ- যাদের তেমন কিছুই নেই চাওয়ার
ওরা চাই না গাড়ী চাই না বাড়ী শুধু চাই দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন- যেন খেতে পারে পেট ভরে।


আমি থাকতে চেয়েছিলাম তাদের কাছে, তাদের পাশে- যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়
কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূল নয়- তাই পেটের তাগিদে কোলাহল যুক্ত শহরে করি বাস।
বাড়ীর উত্তরে শস্য শ্যামলা বিল আর পশ্চিমের ফটকি নদীর পাশে বসলে-
মনেই হয়না- আবার ফিরে যাই কোলাহলে, ফিরে যায় শহর নামক গন্তব্যে।


আমি হতে চাই কবি- ভাবগম্ভীর্যে বোঝেনি কেউ, আমিও পারি লিখতে
কিভাবে যেন এসে পড়লাম- লেখক জোটে কিভাবে যেন উঠে এলো নাম বুঝতে পারিনি
পিতার অনুপ্রেরণায় আর লেখক জোটের অনুরোধে লিখতে থাকি একের পর এক
অবশেষে মিললো বাংলা কবিতা নামক কবি ও কবিতার ওয়েবসাইট- আবার লিখতে শুরু করলাম
লিখতে থাকলাম একের পর এক- ঠিক বেঠিক না বুঝেই
পিতা বলেন, লেখ তুমি লিখতে থাকো- একদিন ঠিকই হবে এক পরিপূর্ণ কবিতা
নিজেকে বুঝতে শেখ নিজেকে তুলে ধরো তোমার লেখায়- কি লিখেছো পড় বার বার
ছন্দে মিল নেই তাতে কোনও ক্ষতি নেই- লেখ লেখ সারমর্ম বোঝ, আরও আরও লেখ
পিতার সেই কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে আজও লিখছি- এক শিক্ষানবীশের মতো করে
জ্ঞান আহরণে ঘুরছি এ পাতা ও পাতায়- কখনও মন্তব্য প্রদানের ভঙ্গিতে
আবার কখনওবা লেখনির শিরোনাম খোঁজার জন্যে।
কখনওবা গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়ছি- নতুনদের লেখনি
খুঁজছি তাদের ভুলভ্রান্তি- খুঁজছি নিজের মতো করে
একসময় হৃদয়ে এসে যায় কিছু কাব্যিক ছন্দ- চটপট পাতা খুলে লিখে ফেলি
একটু একটু করে লিখতে লিখতে দাঁড়িয়ে যায়- কিছু অগোছালো সুর
কিছু সমন্বয় করি আবার কখনও কাটি আবার লিখি-
এভাবেই যেন খুঁজে পাই সেই সুর- সেই হৃদয় উগড়ানো ছন্দ
সেই ভাষা সেই মনের অজানা কথা- সেই হারানো সুরের ভেলা।


পিতার অনুপ্রেরণা আর সহধর্মীনির সহযোগীতায় একের পর এক লিখতে থাকি
ছোট ভাইও কম নয়, মাঝে মধ্যে বলে-
দাদা, ও দাদা, দাওনা একটা! তোমার লেখা কবিতা- একটু পাঠ করি, দাওনা দাদা!
না দিলে কষ্ট পাবে ভেবে- বলি, মেইলে আছে যাও পড়
কিন্তু শর্ত আছে- একা একা পড়বে কাওকে দেখাতে বা শোনাতে পারবে না
মেইল হতে বেড় করে আর পাঠ করে উচ্চস্বরে-
কিছু বললে বলে, তোমার কি- আমি পড়ছি, আমার দাদার লেখা।


ছোট ভাই আমাকে প্রেরণা জোগায়-
শুক্রবার এলেই বলে- দাদা এ সপ্তাতে ক’টা লিখেছো
ও দাদা, দাদা, বলনা- দাদা!
আমি পড়বো- তোমার লেখা পড়তে, আমার খুব ভাল লাগে
বলোনা দাদা? ক’টা লিখেছো।
উপায় না পেয়ে পাতার আইডি আর পাসওয়ার্ড দিয়ে দিই
যা! পড়গে- সরল মনে বসে আর পাতায় ঢোকে
একের পর এক পড়ে- কখনও মনে মনে, আবার কখনও উচ্চস্বরে।


ছোট ভাই কিন্তু একেবারে ছোট নয়? সে স্থানীয় একটি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার
মাগুরা জেলায় হাতে গোনা কয়েক জনের মধ্যে- একজন কম্পিউটার এক্সপার্টও বটে
ইনিয়ে বিনিয়ে যেভাবে অনুরোধ করে- আর আমাকে শ্রদ্ধা করে তা বলার অবকাশ রাখে না
এছাড়াও স্থানীয় উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী শাখার আবৃত্তি সম্পাদক ও অভিনয়ও করে।
সপ্তাহের রবিবার হতে বৃহস্পতিবার কারো সাথে কারো দেখা হয়না বললেই চলে-
কিন্তু শুক্রবার দুপুরে একসাথে বসে সকলে মিলে না খেতে পারলে-
বলে, আজ বুঝি পেটটা ভরলো না- কি যেন একটা ঘাটতি আছেগো মা।


আমাদের সংসারে পিতা মাতা ও ছোট্ট ভাইজিসহ মাত্র সাতজন
শুক্রবার ঠিক সকলেই থাকতে হবে এক টেবিলে- নইলে ওর নাকি পেট ভরে না
তাই অগত্যা বাইরে থাকলেও ঠিক সময়মত দুপুরের খাবার টেবিলে হাজির হই
আমরা সকলেই- ও খুবই খুশি হয় ।
টেবিলে বসে খাওয়ার সময় কথা বলা আমার পছন্দ না যেনেও আমার পিছনে একটু লাগা
ওর বৌদির পিছনে লাগা- কিছু হতে কিছু হলে চোখ রাঙিয়ে বড় চোখ করে ফেলা
এটা ওটা আরও কত কত কেচ্ছা- যা বলে বোঝানো যাবেনা, তবুও এক সাথে খাওয়া
শুধু ওর মুখ চেয়ে।
নিজেরতো আর সন্তান সন্তুতি নেই- তাই ভাইঝি আরত্রিকা’কে নিয়েই যত শখ আহাদ হাসি কাঁন্না
তবুও বেঁচে থাকা- পেটের তাগিদে, তবুও বেঁচে থাকা যেন- জীবনের তাগিদে।


আমি কোন কবি নই- তাই লিখিনি কোন কবিতা
নিজের হৃদয় হতে আসা কিছু ভাষা কিছু কথা লিখেছি মাত্র
হইতোবা যখন রইবো না তোমাদের মাঝে- তখন পড়বে মনে
ছিলো একজন এ আসরে- লিখেছিলো কত না জানা শব্দ- আর নতুন নতুন বিষয় নিয়ে
আহা! ছিল বেশ, ছিল ভাল-
কেন জানি আজ গেল কোথা হারিয়ে
আহা! ছিল ছিল- বেশ ভালো...


(অক্টোবর ১৪, ২০১৭)


বিঃদ্রঃ গত ১৪/১০/২০১৭ তারিখ মনটা খুব একটা ভাল না থাকায় লিখতে লিখতে এটা দাঁড়িয়ে যায়। আজ একটু দেখে নিয়ে কিছু সংযোজন ও বিয়োজন করলাম। লেখনিটি শ্রুতিমধুর নয় তবুও নিজের কিছু কথা লিখে ফেললাম চটপট আর পোষ্টও করলাম আপনাদের পাঠের জন্যে পাতায়। ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন। ধন্যবাদ