'মুখচোরা ঘরকুনো এক কান্না- ভেজানো দরজা দিয়ে ঢুকছে
অসহায় ভাব'
এই প্রথম দু'লাইনেই আমরা কাত।আরে,এ যে আমাদের কথা! কি দারুন ভাবে ফুটে উঠল আমদের অসহায়তা ! যেখানে প্রতিদিন সাবেক সংস্কারের দেয়ালগুলি ভেঙ্গে পড়ছে আর আমরা ভার্চুয়াল দুনিয়ায় পা রাখছি তথাকথিত মুক্তির নামে।কিছুই যেন করার নেই,দেখে যাওয়া ছাড়া ।সামান্য প্রতিরোধ করতে গেলেও দ্বিধাবিভক্ত মতামত।কবি তাই বলছেন,অসমান হাতবাক্সে জমা রেখেছি ছেনি হাতুড়ি ।যত ভার্চুয়াল জগৎ আমাদের গ্রাস করছে তত আমরা নিজেকে নিয়ে, নিজের সুখ,নিজের ভোগ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ছি,আমরা যা নই তা নিয়ে স্বপ্নে বুঁদ হয়ে থাকতে ভালবাসছি।একসময় যার অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হীনমন্যতায় ভুগে এমনকি আত্মহননকে বেছে নেওয়া। এ কৃত্রিম, বাস্তবতা রহিত দূরের জগৎ আমাদের শুধু রিপুর তোষণ পোষনকে উৎসাহ দিচ্ছে দিন দিন। আমাদের অলক্ষ্যে এই রিপুরা পুষ্ট হয়ে কবির ভাষায়  আস্তিনে জড়ো হচ্ছে।এ প্রবনতা কালান্তক। এমনই এক জ্বলন্ত বিপদের ইঙ্গিত কবি শ্রাবণী সিংহের 'রিপু'কবিতাটিতে।


বাংলা কবিতার আসরে যারা ব্যতিক্রমী কবিতা খোঁজেন,কবি শ্রাবণী সিংহ তাদের কাছে এক পরিচিত নাম।তার সব কবিতায় আমরা হয়তো পৌঁছাতে পারিনা সেভাবে,কিন্তু কিছুটাও যখন অনুভব করি,কবিতার কাব্যশৈলী ও ভাবনা আমাদের শুধু মুগ্ধই করেনা,আমরা আশ্চর্য হই মাঝে মাঝে।যেমনটি মন্তব্যে লিখেছেন সুপর্ণা।তখন ময়ূরী রয়ের মতো বেশ ক'বার  কবিতাটি মন দিয়ে না পড়ে উপায় থাকেনা।


এবার আসব কবিতাটির বাকি মন্তব্যগুলি নিয়ে,যেগুলি থেকে সহজেই একদিকে যেমন কবিতার বিষয়বস্তুকে পেয়ে যাব তেমনি ধারনা করতে পারব কবিতাটি সম্পর্কে বিশিষ্ট কবিদের ভালোবাসা।
ছয় রিপু কি আমরা জানি।জানিনা কখন এরা আস্তিনে উঠে আসছে।'সেই ছয় রিপুই আমাদের কালান্তক সাপ হয়ে মনুষ্য জীবনকে ডুবিয়ে দিচ্ছে।অথচ আমাদের খেয়াল নেই 'খুব সঠিকভাবে সারমর্ম দিয়েছেন মৈত্রেয়ী কবি,রীনা বিশ্বাস ।
রিপু শুধু ভোগ করতে বলে।রং তামাশায় মনুষ্যত্ব ভুলিয়ে ভোগ সর্বস্বতার দিকে ঠেলে দেয় আমাদের।কবিতাটি পড়ে কবি চাঁচাছোলার কাব্যিক উপলব্ধি:
'রিপু আজ ভেঁপু বাজিয়ে
বলছে সারাক্ষণ
রং তামাশা এই ধারায়
ভোগ কর জীবন'।
'এই ছয়টি রিপুর থেকেও সাংঘাতিক ভার্চুয়াল দুনিয়া' সতর্কীকরন কবি বিভূতি দাসের।
কবিতায় রূপকের মাধ্যমে যেভাবে একটি সমস্যাকে সামনে তুলে আনা হয়েছে,তাতে মুগ্ধ হয়েকেন নরেশ বৈদ্য। বলেছেন,
'চমৎকার অনুভবের ছোঁয়ায় রূপকের ছটায় এক অনবদ্য কাব্যিক ভাবনা'।
'অসাধারণ!!খুব শক্তিশালী কাব্য...' সব না বলেও কুর্নিশ জানিয়ে গেছেন শব্দ মাধুরী,আরিফুল ইসলাম।
এ চমৎকার অনবদ্য কাব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন উদয়ন কবি স্বপন গায়েন এবং তাপস গুহঠাকুরতা।
সুশোভন কবি,ডা: প্রদীপ কুমার রায়ের মন্তব্যে যেন উপসংহার।
'ছিলাম তো বেশ আগের সময়ে
ছিল হাসি খুশি আনন্দ ঝর্ণা
উন্নতির পথে পা বাড়িয়ে আজ
শুধুই জটিলতা;আর দু' চোখে বন্যা,।


অজস্র অভিনন্দন রইল রচয়িতা প্রিয় কবি এবং কবিতার সকল সমঝদার মন্তব্য প্রদানকারীদের।