সুফিয়া মমতাজ (কাব্যগ্রন্থ) : ২৭ (০৮/১১/২০১৮) অংশের পর-


                ।।২৮।। ব্রিজ ও আমি
অনেকে আমায় বুঝিয়ে দিয়েছে সেতুর পথে না যেতে-
কষ্ট বুঝি বা, কম পাব আমি শূন্য সে সাক্ষাতে!
তাই বুঝি আর অসময় মাঝে যাই না ব্রিজের ধারে-
শহরেতে যাই- কিছু কাজ নিয়ে, কাজ জমা হলে পরে।
প্রতিদিন পথে এ ব্রিজে গেছি তেমন হয়নি ক্ষত;
আজ বুঝি আমি তাদের কথায় একেবারে আশাহত।
সেতুর কথাটি কানেতে বাজিলে চমকে উঠেছি ঘোরে-
শান্তির মাঝে তবুও কোথায় সেতুকেই মনে পড়ে।


যাওয়ার সময় সহজেই যাই মনে আর কিছু বুঝি না;
ফেরার সময় কেন জানি প্রিয় নিজে সামলাতে পারি না।
বাস ছুটে আসে ব্রিজের ধারেতে স্মৃতি আসে আরও দ্রুত;
আবেগের মাঝে ঘিরে ফেলে মোরে সহজেই সহজাত।
দেহ যেন মোর স্থির হয়ে যায় বন্ধ বুকের শ্বাস;
কে যেন আমার বুক চেপে ধরে তীব্র সে আশ্বাস।
ছোটো ছোটো শ্বাস আরও দ্রুত হয়, বেঁচে থাকা কামনা
চোখের কোলেতে জল চলে আসে বাঁধতে যে আর পারি না।


বাসে কত লোক চেনা ও অচেনা আমি বুঝি বেসামাল-
লোকেরা কেমন সংশয়ে দেখে ভেজা বুঝি মোর গাল!
এই বুঝি কেউ জিজ্ঞাসা করে ফুপিয়ে কান্না পায়;
হাতের রুমালে চোখ মুছি আমি অবাধ্য অবস্থায়।
বাইরেতে আর চাইতে পারিনা তাকাতে পারি না ভুলে-
বাসের ছাদেতে দৃষ্টি রেখেছি আমার মাথাটি তুলে।
কখনও আবার চোখটি বুজেছি কেঁদেছি দাঁতটি চেপে-
ভরা সেই বাসে সবাই খুশিতে আমি কোন অভিশাপে!


কতটা যে তুমি স্বজন আমার তখন বুঝিতে পারি;
কতটা কষ্ট এ বুকেতে জমা তুমি চলে গেছ ছাড়ি।
আজকে বুঝি গো শিরা-ধমনীতে তোমার আবেগ বয়
শ্বাস প্রশ্বাস সেও বুঝি আজ তোমাতেই পরিচয়।
শুধু ভেবে গেছি মনেতে আমার তোমার সমর্পণ
অসহায় হয়ে নিজেতেই বুঝি তুমি মোর প্রিয়জন।
এখানে আবেগ আসবেই প্রিয় আবেগ বাঁধনহারা
সময় ছুটেছে, আমরা ছুটেছি তবুও তোমার সাড়া।
                ---------
** চলবে।