সুফিয়া মমতাজ (কাব্যগ্রন্থ) : ৩০ (১১/১১/২০১৮) অংশের পর-


              ।।৩১।। 'বালিঘাট' পাড়ি দেবে
তোমার ছেলেটি তোমার মেয়েটি ভুলবে না কোনোদিন-
আজীবন শুধু মনেতে রাখিবে তোমার স্মৃতির ঋণ।
মৃত্যু খবর শুনিবে গো যত পথের দুর্ঘটনা;
বুকের ভিতর কাঁপিয়া ঊঠিবে বাজ পড়ে মেঘ বিনা।
চারিদিকে যত মৃত্যু ঘটিবে, রাখিবে তাহার খোঁজ-
তাদের মায়ের এমন মৃত্যু হবে না তো রোজ রোজ।
মৃত্যুর কথা শুনবে যখন বুকটি উঠিবে কেঁদে-
আপন পরানে কোনো কিছু আর রাখিবে না জানি বেঁধে।


'সলিলসমাধি' জানতে এখনও অনেকটা পথ দেরি;
শব্দের সাথে স্মৃতিটা ওদের হবেই নিত্য ফেরি।
যতবার যাবে এ ব্রিজের পথে- 'বালিঘাট' দেবে পাড়ি;
ধড়ফড় করে কেঁপে ওঠে ওরা আঁখিকোণে জল ছাড়ি।
জীবনের মাঝে অভিশপ্ত এ রোজকার বালিঘাট;
শৈশব কালে জেনে গেছে ওরা ভেঙে গেছে ও ললাট।
ব্রিজের পথেতে যতবার যাবে আসবে মায়ের কথা-
জল টলমল ভৈরবী নদী দিয়েছে তাদের ব্যথা।


শিশুপাঠে যত ঘটনা পড়িবে তাদের ক্লাস ঘরে-
কোমল হৃদয়ে সেই কথাখানি অবেলায় মনে পড়ে।
অন্য শিশুরা মায়ের সাথেতে নিত্য করিবে খেলা-
শিশুমন বোঝে একা অবেলায় তাদের কে অবহেলা।
মায়ের ছবিটি, মায়ের কথাটি তাদের জীবন সার;
চলমান পথে অবেলার স্রোতে মনে আসে বারবার।
ঘরের দুয়ারে লেখা আছে নাম 'প্রিয় মা তুমি সুফিয়া'
আগুন সে মন নেভাবে কেমনে শীতল সে পানি দিয়া।


আমাদের শিশু ভুলে গেছে সব জীবনের আহ্লাদ;
মনের ঘরেতে আঁধার এসেছে ভুলে জীবনের স্বাদ।
বেঁচে আছি যেন বড়ো বিষময়, বিষজ্বালা এই বুকে-
সকল বাসনা রেখেছি গোপনে আড়ালে আদরে ঢেকে।
এখন আমরা বেঁচে আছি প্রিয় সকল কিছু হারিয়ে;
খেতে হয় খাই, শ্বাস নিতে হয়! বিরহ-কান্না ছাড়িয়ে।
মন ভালো নেই, বাড়ে মনোপীড়া ফিরে ফিরে আসে দুখ;
তোমার মাঝেতে ডুবিয়া থাকি যে যদি কিছু পাই সুখ।
              ----------
** চলবে।