সুফিয়া মমতাজ (কাব্যগ্রন্থ) : ০৫ (১৭/১০/২০১৮) অংশের পর-
    
             ।।৬।। মানিশের জন্মদিন
আজকে যে প্রিয় চেনা সে তারিখ তেরোই ফেব্রুয়ারি;
দু বছর হল প্রিয় মানিশের প্রথম সে মাকে ছাড়ি।
মনে পড়ে সেই সুখকথা বেলা, এই তো সেদিন এল-
জন্মদিনের কত ভাবনায় আজকে বিফলে গেল!
অনেক কথায় বলতে গো তুমি এই দিনটাকে ঘিরে
আজ তুমি নেই! দিনটি এসেছে, আসবে যে ফিরে ফিরে।
মন মাঝে শোক, ঘরে-পথে শোক, ভীষণ শোকের বেলা-
তবুও ছেলের এ জন্মদিনে করিনি তো অবহেলা।


এই তো সেদিন জনমের দিন করেছি সাড়ম্বরে;
বুঝতে দিইনি তুমি নেই কাছে তুমি নেই এই ঘরে।
সাজিয়েছি বাড়ি, ফুল সারিসারি ছেলের খুশির তরে;
বোধনের কাল এভাবেই এল জীবন রয়েছে পরে!
এসেছে কতক পাড়ার শিশুরা আর সমব্যথী যারা;
জন্মদিনেতে মজা করিয়াছে খুশিতে আত্মহারা।
প্রিয় দিদি তার ভালোবাসিয়াছে জড়িয়ে ধরেছে বুকে-
কত আজ বোঝা প্রিয় দিদিটির অঙ্গীকারের সুখে!


ঘর বাড়িময় হাজার খেলনা খেলিছে দামাল ছেলে;
কখনও বা ঘড়ি, কখনও চশমা সব কিছু সাথে ফেলে।
আজকে আমার সময় কাটিছে এখানে অনেককাল
আজকে যে আমি- বাবা রূপে রাত, মাতৃ রূপে সকাল।
আমার মাঝেই আজ দুই রূপ কত যে কঠিন ব্রত!
অষ্টপ্রহরে কতই ঘটনা ঘটে যায় অবিরত।
তবুও তো আমি হইনি পাগল হই নাই অতীষ্ঠ
ওদের মনের খুশিটি বুঝিতে ভুলে গেছি আমি কষ্ট।


এখন ছেলে যে খেলিয়া বেড়ায় বল হাতে ওই মাঠে;
আমি আজ তাকে সময় দিয়েছি আমার কাজের ফাঁকে।
ছোটো সাইকেল চালিয়ে বেড়ায় খেলে বসে তার সাথে;
মায়ে বুঝি তার বারণ করে না আর তো দিবস রাতে।
ওকে নিয়ে থাকি ওর সাথে খেলি তাকাই চোখের দিকে-
কতই স্বপন খুঁজে চলে শিশু সকল স্বপন তার ফিকে।
কখনও বা হাসে কখনও বা কাঁদে, দৃষ্টি আকাশ পানে-
তবুও কোথায় ঋণী মন তার খুঁজিছে অন্যখানে।
              --------
** চলবে।