সুফিয়া মমতাজ (কাব্যগ্রন্থ) : ০৮ (২০/১০/২০১৮) অংশের পর-


             ।।৯।। বাড়ি জুড়ে কান্নার ঢেউ
বাড়ি জুড়ে শুধু কান্নার ঢেউ ডুকরে ডুকরে ওঠে;
কেউ বুঝি এল! কী জানি কি বলে! মেয়ে দেখে ছুটে ছুটে।
ছেলেটি কখন খেলাতেই মেতে, কখন ভাবেতে থাকে;
কখন আবার কান্নার সাথে আম্মা আম্মা ডাকে।
তোমার প্রয়াণে মানুষ ব্যথিত অকাল প্রয়াণ তাই;
ছেলে মেয়ে আমি যে উদবিগ্ন, উদবেগে সব্বাই।
কীভাবে তাদের জীবন কাটিবে কী আছে ভবিষ্যৎ;
আমি তো যাব কর্মের দেশে কীভাবে সময় পথ!


সকালের কালে খবর এসেছে তুমি আর বেঁচে নেই!
কান্নার স্রোত বয়ে গেছে শুধু আমাদের বাড়িতেই।
উঠান জুড়িয়া সে আর্তনাদ কেঁদেছে গাছের পাতা
বাড়ির পথেতে শত জিজ্ঞাসা ভিড় করেছে জনতা।
সবার মুখেতে সুফিয়ার কথা কবেকার লেখা ছিল!
একে অপরের দুঃখের কথা অন্যকে বোঝাইল।
ঘরের দুয়ারে ঘরের বাতাস তারা এসে কেঁদে গেছে-
ছোটো ছোটো সব ছেলে ও মেয়েরা আজ ভিড় জমিয়েছে।


একে একে আসে কত প্রিয়জন দূর দূর গাঁও থেকে-
উচ্চৈঃস্বরে ডেকে গেছে তারা আমাদের সুফি'কে।
যত বেশি ছিল কান্নার রোল, শিশুদের তরে বেশি;
শিশু ভাগ্যের হিসাব নিতেই কান্না যে রাশি রাশি।
কখনও কেঁদেছে বালিকা মেয়েটি তাদের বুকেতে মিশে
সেই কান্নায় ছেলেটি আমার গিয়েছে আবেগে ভেসে।
প্রতিবেশীজন সবাই এসেছে সুফি'র ইন্তেকাল;
প্রতিবেশী মনে সুফি'র বিদায়, হারানো চিরটিকাল


উঠানের মাঝে তখনও শুকায় সুফিয়ার ভেজাশাড়ি
সবার নজর সেই দিকেতেই তুমি শুধু নেই বাড়ি।
শিশুটি তোমার সমানে কেঁদেছে পেটে বুঝি ওর ক্ষুধা;
চোখেতে কান্না, কেই বা খাওয়াবে! এই ছিল অসুবিধা।
আর পারি নাই! সইতে গো প্রিয় এই ব্যথাভরা দিন;
কী সে যাতনায় সময় কাটিছে কেটে গেছে অমলীন।
কত যন্ত্রণা, কত হতাশায় আমারে ঘিরিয়া ডাকে;
তোমার মতন গুছিয়ে গুছিয়ে কে গো বলো সব রাখে!
                  -------
** চলবে।