এখন আমার অখণ্ড অবসর।
ভাবনারা ছুটি নিয়েছে অনন্তকাল।
বিভীষিকাময় বিনিদ্র রাত্রিতে স্বপ্নেরা পলাতক।
অনুভব-অনুভূতির মাথায় আজ বন্দির হাজারটা পরওয়ানা,
হৃদয় নিভৃতে শুধু অন্ধকার খোঁজে
দলছুট ভালোবাসা।


অথচ একটা সময় ছুটির দিনগুলোতে আমার ঘুম ভাঙতো  তোমার মায়াবী কুহুতানে।
     : দশটা বাজে এখনো ওঠনি জানু?
উম্মম্মায়াহহহহ.....
এক্ষুণি ওঠো, ফ্রেস হও,নাস্তা কর...
আরও কত কি....
আমি চোখ ডলতে ডলতে উঠে পড়তাম তৎক্ষণাৎ।
তোমার মায়া মাখা মুখ সারাদিন উষ্ণতা ছড়াতো আমার শিরা-ধমনিতে আর কর্ণকুহরে বাজতো সকালের সেই মায়াবী নির্দেশ।
আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো নিরলস শুধু তোমাকেই পড়তাম আর তোমাকেই করতাম অহর্নিশ।


অতঃপর দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে যখন আমাদের দেখা হত কোন এক মাহেন্দ্রক্ষণে;
হাজার চোখকে ফাঁকি দিয়েও তুমি যেন পিষে ফেলতে আমাকে তোমার উত্তপ্ত বুকে।
আমি শুধু চোখবুজে সুখ নিতাম,স্বর্গীয় সুখ।
তোমার বুকে শুয়েই আমি নগ্ন জোছনা দেখেছি প্রথম,দেখেছি তারাদের সঙ্গম।
তোমার আটত্রিশ ইঞ্চি বুক তখন আমার কাছে মনে হত অকৃত্রিম প্রেমের এক উত্তাল সমুদ্র।
আমার চোখ,মুখ,ঠোঁট থাকতো সেই সমুদ্রের পাতাল ফুঁড়ে ঝিনুক আর ঝিনুক থেকে মুক্তো আহরণে মোহাবিষ্টের মত নিমগ্ন।


হতবিহ্বল  আমি তোমার বুকে মাথা রেখেই ভাবতাম,
আহা....!
কি করে এত ভালোবাস তুমি,
প্রেমের মণি মুক্তো কাঞ্চন তুমি হৃদপিণ্ডের কোন অলিন্দে লুকিয়ে রাখ অমন করে,যেমন ডিমের ভিতরে হলদে কুসুম।
কি করে করতে পার প্রেমের মোহময় শাসন?


আজ সবকিছুই স্বপ্নের মত মনে হয় আমার,
না না স্বপ্ন নয় যেন দুঃস্বপ্ন।
অবিশ্বাস আর ঘৃণা জমে জমে শুকিয়ে গেছে ভালোবাসার সুগভীর সমুদ্র।
হারিয়ে গেছে প্রেমের রাশিরাশি ঢেউ আর অবারিত জোছনা।
তবুও তোমার কম্পিত যুগল ঠোঁটের ভাষাহীন অভিব্যক্তি, তোমার ভাঁজপড়া ঘর্মাক্ত কপাল আর সরু চোখের অব্যক্ত আহ্বান আজও ব্যবচ্ছেদ করে হৃৎপিণ্ড আমার।
আজও আমার কর্ণকুহরে অষ্টপ্রহর দোলা দেয়  তোমার সেই আদুরে শাসন....
      : দশটা বাজে জানু, এক্ষুণি উঠে নাস্তা কর....
লক্ষ্মী সোনা,উম্মায়ায়াহহহ...
-----------+++++++--------