একদিন আমিও নিঃশেষ হয়ে যাব সময়ের গভীরে
হারিয়ে যাব তোমাদের ছেড়ে শত স্বপ্ন-আশার ক্ষত চিহ্ন এঁকে
পাওয়া না পাওয়ার আনন্দ-বেদনা বুকে চেটে
জোনাকির আলো আধাঁরে রাঙ্গানো মন নিয়ে
ঘাস ফড়িংয়ের মত উড়ার বাসনা নিয়ে
আমি একদিন যাবই না ফেরার দেশে লুকিয়ে
মাঝি মাল্লার দল ছেড়ে
সাদা-কালো-লাল রঙ্গ মঞ্চের বাঁধন ছিঁড়ে
মুখ ফিরে থাকাবো না এই ভব সংসারে
গাইবো না ভাটিয়ালী জারি সারি লালন পল্লীগীতি
বেদনা বিধুর জাগবে স্মৃতি হাহাকার
আলোচনা-সমালোচনা'র পাত্র হবে
রেখে যাওয়া মম ব্যবহার
আমি তখন রব নিরব নির্বিকার।


আমিও একদিন যাব চলে সব কিছু ফেলে
দরজাহীন বন্ধি সেলে চার পাইয়াতে চড়ে
জৈষ্ঠের জলে ভিজে আম কুড়ানো হবে না
হবেনা আর বর্ষার নতুন জলে গোসল
দ্বিপ্রহরে পাড়ার সকল দুষ্টু ছেলের সাথে হৈ-হুল্লোরে মাতা
হবেনা আর শেষ বিকেলে গোল্লাছুট খেলা
রাত্রি শেষে ঘুম থেকে ওঠা
তারপর আবার নিত্য পথ চলা
সবই একদিন হবে মরণ মলাটে বাধাঁ।


আমিও একদিন যাবো মরে এই শহরে
যাবো সাড়ে তিন হাতের ঘরে
সকালে বিকেলে কিংবা ভরদুপুরে
না হয় কোন এক নির্মল ভোরে
আজরাঈল (আঃ) এর হাতছানিতে
যেতেই হবে অন্তত কালের জানা অনিশ্চিত সুখ দুঃখের নিগড়ে।
দুষ্টামির ঐ সন্ধ্যা আর বাড়ি ফেরার তাগিদী প্রহর
সবই একদিন হবে পর
বাঁশবাগানে চাঁদের সাথে হবেনা আর লুকোচুরি খেলা
অমাবস্যা আর পূর্ণিমায় জোনাকির সাথে
সবই রবে এখানে ওখানে শুধু থাকবো না কোথাও আমি।
আমিও একদিন যাবো শেষ শহরে পৌঁছে
মৃত্যুর মতো আপন পথে
রবো না চির বাংলার রথে
রমনার বটমূলে, শহীদ মিনারে, বিদ্রোহীর ছায়াতলে,
হবেনা আর প্রেম করা ভালো লাগার সাথে!!
নবান্নের উৎসবে মাতা, পিঠা পুলি খাওয়া
দক্ষিণা মলয়ের টানে খোলা জানালার পাশে
হবেনা আর কোনদিন বসা
প্রিয়ার খোঁপায় হবেনা গাঁথা
জুঁই জবা গেণ্ধা।


ব্রিঃ দ্রঃ (কবিতাটি আমার যখন দশ কি বার বছর বয়স তখন লিখা।)