আসমানে সাদা তুলার নাহান মেঘ, উঠানে চকচইক্যা রইদ
তহন সোহাগীর বুকে  নাচে সমুদ্দুর,
টিনের চালে শালিকজোড়া কি কথা কয়!
আচমকা গরজায় আসমান – সোহাগীর কাঁপে না পরান
ঝুপ-ঝাপ মেঘের কান্দনে ভিজা একাকার সোহাগীর গতর।
মরদ দেহে,  হায়রে বৌ একেবারে ভিজা লোতর পতর
আলতা মাখা পা; কাদায় মিশা একাকার
ছি ছি ছি!  পাড়ার নুরী বেউয়া দেখলে কইবো কি?


এই অবেলায় আসমানের এতো তেজ, বৃষ্টি নামছে জোরে
উঠানে সোহাগী নাচে ,যেন গাঙ্গের ঢেউ!
আড়ালে লুকাইয়া দেহে যদি কেও?
সোহাগী চোখে  চোখে ঠারে ঠারে দেহে সুয়ামিরে
দেহ, এই মেঘের ভিতরে আসমানে ওই দূরে গাঙচিল উড়ে
মরদের ঠোটে চতুরির হাসি ;
সেই হাসিতে কাশবনে লিলুয়া বাতাসের কাঁপন
তবুও সোহাগী আইজ কেমুন কেমুন- উচাটন মন!


ওই দেমাগি, এতই যদি বিগার ওই শরীরে, লো চকে যাই
ধানের ভাঙ্গা আইল সাড়াই ,পুড়া জমিন পানিতে ভরাই
সোহাগী চোখ নাচায়, ভাবখান-আমি কি  ডরাই, কিসের বড়াই
বৃষ্টির জোর কমলে, ভাঙ্গা জমির আইল বান দেওন লাগবো ;
তবুও মরদ ফাঁসে সোহাগীর জালে,
মহুয়ার গন্ধমাতাল করে মন, চাষার পোলায় করবো কি অহন?


জমির আইলে বেশরম বউ-তবু চোখ ফিরায় মরদ সবুজ ক্ষেত্রের দিকে
চাইর দিকে খালি সবুজ আর সবুজ, গুণটানা মাঝি আচমকা  টানে সুর
মরদ গলায় দরদ আইনা কয়.........
দেখ বউ ফসলের মাঠ সবুজ ফসলে কিমুন বেসামাল!
ঐযে পুয়াতি বউয়ের মতন, ধানের শীষ ফাইটা ফাইটা  যায়
সোনালি শীষ নাচবো কয়দিন পরে, জবর ফসল অইবরে বউ;
আমাগো কপাল ফিরবো , কয়দিন পরে গোলায় তুলুম ধান
আহারে সোনালি ধান, কয়টা খরার পরে,
এইবার সুখ আইব চাষার ঘরে।
এই শরতের শেষেই ফসল কাটুম
হেমন্তের উৎসব আগেই মানামু
অভাগী বইনডারে নাইওরে আনুম ,
জংলি ছাপার শাড়ি কিন্না  দিমু তারে
হইছে, তুই আবার মুখ গোমরা করিস না ,
তরে ও দিমু লিলাম্বরী শাড়ি।


জেলে পাড়ায় যেন জীবনের মেলা
দরিয়ায় মাছ ধরে, জাউলার দল ভয় নাই বুকে
গহিন সমুদ্রে মাছ ধরে সুখে ,
মহাজনের টেকা  দিয়াও মেলা লাভ থাকে
মাছ যদি জুটে -জেল পাড়া নাচে সুখে
খ্যামটা নাচ ঝুমুর তালে!
কোমড় দোলায় যইবতি কন্যা ।


মুখ ভার সোহাগী মরদের পেছনে পেছনে হাঁটে
মরদের হাত ছাইড়া গভীর কাশ বনে হারায়-
সোহাগিরে নিয়া- বেচাইন
বাতাসে কাশবনের ফুল দোল খায়,
কহনযে সোহাগী কাশবনে দিছে ডুব
বেচাইন মরদ……........................


শরতের কবিতা(আঞ্চলিক ভাষায় লেখা)দুই যুগ দেশের বাহিরে তাই কবিতায় বানান ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন সবাই।