নিশ্চল আত্মিক বেদনায় দীর্ণ জননীভূমি—
যখন বিচ্ছিন্নতার বিষবাষ্পে ক্ষতবিক্ষত,
তখন একতাই হয় সেই পরম প্রলেপ,
যা জোড়ে ভগ্নস্বপ্ন, পুনর্গঠন করে পতাকাবাহিত প্রেরণার ভিত্তি।
দেশপ্রেম—এ কেবল আবেগ নয়,
এটি এক দুর্জয় আদর্শ,
যার প্রকৃত রূপ উদ্ভাসিত হয় একতার অগ্নিস্নানে।
একতা এখানে নিছক মিলন নয়,
বরং রক্তে মিশে থাকা চেতনার এক অভেদ্য অভিজ্ঞান।
এটি এক অন্তঃসলিলা ধারা,
যা প্রবাহিত হয় বাংলার স্নিগ্ধ মাটির গহীনে,
ছড়িয়ে পড়ে পদ্মা-মেঘনার রক্তজল বর্ণমালায়।
একতা মানে ভাষার জন্য রক্তদান;
একতা মানে, সংস্কৃতির জন্য নিরবিচারে আত্মনিবেদন;
একতা মানে, শত মতপার্থক্যের মধ্যেও দেশের জন্য অটুট শপথ।
স্বাধীনতা যেমন এসেছে রক্তাক্ত ঐক্যের কণ্ঠে,
তেমনি প্রগতির পদধ্বনি আসে সমবেত হৃদয়ের স্পন্দনে।
বিচ্ছিন্ন চেতনারা কেবল কলহের অনুরণন তোলে;
কিন্তু একীভূত আত্মারা রচনা করে উন্নয়নের অখণ্ড মহাকাব্য।
একাকী আমরা মৃত্তিকার মতো ছিন্নভিন্ন;
একত্রীভূত হলে পরিণত হই অভেদ্য প্রাচীরে,
যেখানে শত্রুও হয় নিরস্ত্র।
জাতির ইতিহাস প্রমাণ করে—
যেখানে ছিল একতা, সেখানেই জন্ম নিয়েছে বিপ্লব,
উদ্ভূত হয়েছে স্বতন্ত্র পরিচয়ের মহিমা।
একতার দ্যুতি ছাড়া দেশপ্রেম নিছক অলঙ্কার;
আর একতার স্পন্দন ছাড়া উন্নয়ন এক মরীচিকা।
আজ তাই প্রয়োজন হৃদয়ের ঐক্য, চেতনার সংহতি, এবং দেশপ্রেমের চূড়ান্ত প্রকাশ।
যেখানে আত্মস্বার্থ নয়, জাতিস্বার্থ হয় প্রাধান্যপ্রাপ্ত।
কারণ একতাই সেই মহৌষধ,
যা নিরাময় করতে পারে জাতির সকল জীর্ণতা;
একতাই সেই মহাশক্তি,
যা নির্মাণ করতে পারে একটি অবিনাশী, অদম্য, অভেদ্য বাংলাদেশ।
=========