বাজার যাবার পথে চোখে পড়ল,
অবহেলায় পড়ে থাকা একটি টগর গাছ,
সাদা ফুলের ওড়নায় আবৃত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি মুগ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম , মনে হল-
সেই শ্বেত শুভ্র আবরণে আবৃত বৃক্ষটি
যেন আমাকে একটু ঝুঁকে কুর্ণিশ করল।


হয়ত ভাবল, সবাই তো শুধু ফুলই আহরণ করে,
তার অমিত সৌন্দর্যে, কেউ তো মুগ্ধ হয় না।
বাজার করে ফেরার সময় দেখি-
এক ভিখারিনী কন‍‍্যা, অনেক টগর ফুল কুড়িয়ে
মালা গেঁথে, গলায়, মাথায় পরে, নানান ভঙ্গিতে,
নিজেকে দেখছে, হাতের ছোট আয়নায় আপন মনে।


অবাক চোখে লক্ষ করলাম, সেই টগর গাছ থেকে
আরো অনেক ফুল, টুপ টুপ করে ঝরে পড়ছে,
যেন সেই ভিখারিনীকে সাজাতে উদ‍্যত টগর গাছটি।
হটাৎ আমার দিকে তাকিয়ে ভিখারিনী বলল:
বাবু শুধুই দেখবেন? কিছু নেবেন না?
আপনার বাড়ির ঠাকুরের ফুলের মালা চাই?


আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে, টগর গাছটিকে দেখছিলাম,
টগর গাছের সাথে একাত্ম হয়ে ভাবছিলাম,
আমি যদি মালা পরিহিতা ভিখারিনী কে সুন্দরী বলি,
তাহলে সাদা ফুলে ঢাকা টগর গাছ ও তো সুন্দরী,
এটা শোনার জন‍্যই কি উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষায়?
দোটানায় পড়ে বিহ্বল চোখে দাঁড়িয়ে পড়লাম।


কতক্ষণ দুজনের সৌন্দর্য‍ দেখেছি মনে নেই,
ডান হাতের কব্জি পর্যন্ত পাঁচটা মালা ঝুলিয়ে-
ডাগর চোখ দুটি মেলে, ভিখারিনী এসে বলল,
মালা নেবে মালা? পাঁচটা পাঁচ টাকা।
আমি বললাম, তোমাকে রোজ পাঁচ টাকা দেব,
তুমি শুধু গাছটার গোড়ায়, রোজ জল দিও।