আজব নিয়ম
—উৎপল নরেন্দ্র মাইতি


সেই কোন ছেলেবেলাকার কথা !
তখন ছিল না এত ভারী ভারী বই খাতা ।
আমি তখন হব কোন শ্রেণীতে ?  পঞ্চম  কি  ষষ্ঠ ?
ছিল না বিশেষ বিদ্যে বুদ্ধি ;
গাঁয়ের ছেলে তায় আবার দুষ্টু, ঐ যা হয় আর কি !
শুনলাম একদিন,
মাস কয়েক পর বাংলা শিক্ষক নিচ্ছেন অবসর ।
বুঝিনি তখন অবসরের মানে,
পরে জানলাম তিনি স্কুল ছাড়ছেন চিরদিনের তরে ।
খুবই অবাক হলাম !  কষ্টও পেলাম মনের গভীরে !
উনি তো খুবই ভালো পড়াতেন,
কোনো ভাবেই কি তাঁকে রাখা যেত না ধরে ?
তখনও বুঝিনি অবসরের মানে আসলে কী ।  
পরে পারলাম বুঝতে
তাঁর বয়স যে পেরিয়ে গেছে নিয়মের মাপকাঠিতে !


আচ্ছা !  এমন নিয়ম সবার বেলাতে নয় কেন ?
কৃষক, শ্রমিক, মজুর... এরা কি ছুটি পাবে না কক্ষনো ?
না না, শুধু এরাই নয়তো !
মা-ঠাকুমা, কাকীমা- জ্যেঠিমা… এরাও যে আছে এখনো ।
এরাই জানে কোন জিনিসটি কার আর ঠিক কোন সময়ে দরকার ।
হলোই বা সংসারে,
অর্থের সাথে কি এদের পরিশ্রমের তুলনা চলে ?
এরা কেবল সারাটা জীবন অন্তিম রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত
অমানুষিক পরিশ্রম করে যাক !
তাতে তার কাজের শক্তি থাক  বা না থাক !
এদেরই কেবল অবসর নেওয়া মানা !
তা নাহলেই জোটে কপালে শুধু অবজ্ঞা অবহেলা আর লাঞ্ছনা !


এ আবার কেমন নিয়ম ?  এতো এক আজব নিয়ম !
নিয়ম জোরে অবসরে যেতে হয় কর্মদক্ষদেরে,
আর অন্যরা সব ?  নিরুপায়ে, বার্ধক্যেও খেটেই মরে !
                                 *****