দেখেছি এক কাকাতুয়া জুটি সারা বিশ্ব ঘুরে
এসে বসলো গাছের ডালে।ওরা যা দেখলো
সে-সব নিয়ে আলাপচারীতা করলো দুইয়ে।
ওরা নাকি দেখেছে সমগ্র বিশ্বের মানুষদের
জোঁকের মতো বেশ কামড়ে ধরছে করোনা
ভাইরাস।চীনের উহান প্রদেশ থেকে সে-সব
সেজে-গুঁজে বের হয়ে দেশ-মহাদেশের গণ্ডি
ছাড়িয়ে ছড়ালো সমগ্র ভূ-বলয়ে।
ভয়ঙ্কর ওরা।সংক্রমণ ঘটাতে তৎপর।ভয়ে
মানুষেরা ঠাই নিয়েছে বদ্ধ ঘরে।মাঝে মাঝে
বিপর্যয়ের খণ্ড-চিত্র দেখছেন জানালা দিয়ে
উঁকি মেরে।
কাকাতুয়া জুটি বললো,দেশ-বিদেশে এখন
বন্ধ কৃষি ও শিল্পে উৎপাদন।দেশের মজুত
খাদ্য ফুরবে ই যখন,কী খাবেন জনগণ।সব
দেশে ই এলোমেলো বাতাসে যেন প্রদীপের
আলোর মতো নিবু নিবু চিকিৎসা সহ সমস্ত
স্বাস্থ্য-পরিষেবা।সন্তান ও নিজেদের জীবন
বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কায় আরাধ্য দেবতাদের
স্মরণ করছেন সব সন্তানসম্ভবা।
যে ভাবে মানুষদের মারছে করোনা ভাইরাস,
চিকিৎসকদের কেহ ই নাকি দিতে পারছে না
বাঁচানোর আশ্বাস।
চারদিক মরুভূমির নিস্তব্ধতা।শ্মশানে নিভছে
না জ্বলন্ত চিতা।সব দেশে মৃতদেহ সৎকারের
জন্য কবর বা সমাধির ক্ষেত্র প্রস্তুতির পর্ব ও
চলছে নিরবধি।
অধিকাংশ দেশের আর্থিক অবস্থা বেহাল।গালে
হাত দিয়ে প্রবীণ-প্রবীণা বলছেন,কী যে হলো
দিনকাল।ইতিপূর্বে দেখেছেন দু’-দুটি বিশ্বযুদ্ধ।
তখনও দেশে দেশে হয়েছে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি।
যুদ্ধ শেষে সমগ্র বিশ্বে সামাজিক ও অর্থনৈতিক
চেহারা আমূল বদলে গেছে।ভাবছেন আবারও
কি আসবে সেই দশা।আতঙ্কে শুকিয়ে যাচ্ছে
তাদের গলা,জাগছে পিপাসা।
তারা শুনেছেন,কাকাতুয়া জুটি বললো,‘করোনা
ভাইরাসের দরুন সমগ্র বিশ্বে সংক্রমণ ছড়িয়ে
পড়েছে বিশ্বে যে ক্ষয়ক্ষতিটা হচ্ছে,তা পূর্বের
বিশ্বযুদ্ধ গুলো থেকে কম কিসে’।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে নাকি লাগবে সময়।
যেভাবে ঘটছে বিপর্যয়,হয়তো বিশ্বের নানান
দেশে অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা আমূল
বদলে যেতে পারে।
কাকাতুয়া জুটি পথে কোথাও নাকি দেখেছে,
এক সুবিশাল রাজ প্রাসাদের সিংহ-দুয়ারের
বাইরে খাদ্যের দাবীতে কঙ্কালসার শত-সহস্র
নরনারী দের ভিড়।রাজামশাই ঘুলঘুলি দিয়ে
সেই দেখে বলছেন,‘পড়েছি যে মহা ফাঁপরে।
যা দেখছি, লাশের পাহাড় গড়ে দিলেও ভয়,
হয়তো তখন উচ্চতায় হার মানবে হিমালয়’।
শেষে,তিনি ভেবে চিন্তে পা-বাড়ালেন,ওদের
সাথে ভিড়ে একই কল্কি তে তামাক খেতে।