========================


একটি নাম ছিল,
অত্যাচারিত, নিপীড়িত, নিষ্পেষিত জনতার।
একটি নাম ছিল,
লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার।
একটি নাম ছিল,
রক্তস্নাত লাল সবুজ পতাকার।
সেই নাম ছিল,
হানাদার আর স্বৈরাচারের মূর্তিমান আতঙ্ক।
সেই নাম ছিল,
উত্তাল প্রতিবাদের বজ্র নিনাদ কণ্ঠ।
সেই নাম,
বিষের বাসুরি, প্রলয় ডংকা, অনলবর্ষী
এক অমর কাব্যের কবি।


সেই নামটি মুছে দিতে
তাদের প্রচেষ্টা ছিল প্রাণান্ত।
আসলে তারা মুছে দিতে চেয়েছিলো একটি  মানচিত্র,
একটি  জাতি, একটি  স্বপ্ন, একটি  পরিচয়, একটি  অস্তিত্ব
ভাটিয়ালি, জারি, সারি, কবিতা, মুক্ত ছন্দ
অদম্য তারুণ্য, আবেগ, অশ্রু, আনন্দ।
কারণ, তারা যে জানতো
শুধু নামটা মুছে দিলেই,
বাকি সব মুছে যাবে এমনিতেই,
ভেসে যাবে খড়কুটোর মতো,
তাইতো
দেয়ালের লিখন, স্লোগান, পোস্টার, ব্যানার
পাঠ্যবই, গান, গল্প, কবিতা
জ্ঞানগর্ভ গবেষণাপত্র, ইতিহাসের পাতা
রন্ধ, রন্ধ, অন্ধ গলি, প্রতিটি ধূলিকণা
এমনকি সমাধির এপিটাফ হতেও
মুছে ফেলা হয়েছিল নামটা।
শুধু মুছেই ক্ষান্ত  হয়নি,
সে নামের সাথে জুটেছিল অবজ্ঞা,
অপমান, অসম্মান আর অশ্রদ্ধা।
মিথ্যে কথার ছল চাতুরীতে,
ছুড়ে ফেলা হয়েছিল আঁস্তাকুড়ে।


তাদের চেষ্টার কোনো ত্রূটি ছিল না।
কিন্তু, তারা তো জানতো না
মুজিব কোনো নাম নয়,
যে মুছে ফেললেই মুছে যাবে।
মুজিব কোনো সত্ত্বা নয়,
যে এক ফুৎকারে উড়ে যাবে।
মুজিব কোনো সন্ধ্যাতারা নয়,
যে রাত হলেই ঢেকে যাবে।


মুজিব কৃষ্ণ কালো অন্ধকারের এক ধ্ৰুব তারা,
অনন্ত সময়ের রথে
অবিরাম যে দেখায় মুক্তির দিশা।
মুজিব এ বাংলার এক অবিনাশী ইতিহাস,
নির্যাতিত আর অধিকারবিহীন মানুষের
বুকের কন্দরে লালিত এক স্থির বিশ্বাস।
তাইতো
এ বাংলার আকাশ, বাতাস
প্রতিটি শিশু, প্রতিটি তরুণ, প্রতিটি মানুষ
এক একটি অযুত মুজিবের প্রতিভাস।


==================================


(মুজিব শতবর্ষ)